(ক) কারক
কৃ-ধাতু ও পক্ প্রভায়যোগে কারক শব্দটি নিষ্পন্ন। কৃ-ধাতুর অর্থ "করা"। সুতরাং কারক শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ 'যা ক্রিয়া নিম্পন্ন করে। রিয়া বা কার্য সম্পাদনের ব্যাপারে কোন না কোনভাবে সাহায্য করাই কারকের কাজ। সুতরাং বলা হয়, 'রিনাহয় কারকম"। ক্রিয়ার সঙ্গে যে যে পদের অক্ষয় বা সম্বন্ধ থাকে, তাদের কারক বলা হয়। যেমন- তীর্থক্ষেত্রে রাজা স্বহস্তেন কোষাৎ দরিদ্রায় ধনং যচ্ছতি (তীর্থক্ষেত্রে রাজা স্বহস্তে কোষাগার থেকে দরিদ্রকে ধন দান করছেন)।
কং যচ্ছতি (কে দিচ্ছেন ? -রাজা (কর্তৃকারক),
কিং যচ্ছতি (কি দিচ্ছেন? ধনম্ (কর্মকারক)...
কেন যচ্ছতি (কিসের দ্বারা দিচ্ছেন) হতেন (করণকারক),
কস্মৈ যচ্ছতি (কাকে দিচ্ছেন? দরিদ্রায় (সম্প্রদান কারক),
কস্মাৎ যচ্ছতি (কোথা থেকে দিচ্ছেন)? - কোথাৎ (অপাদান কারক),
কুত্র যচ্ছতি (কোথায় দিচ্ছেন)? - তীর্থক্ষেত্রে (অধিকরণকারক)।
এভাবে যচ্ছতি ক্রিয়াপদের সঙ্গে বাক্যস্থ অন্য সকল পদের সম্বন্ধ আছে। সুতরাং এরা প্রত্যেকেই কারক।
কারকের প্রকারভেদ
কারক ছয় প্রকার (ষট্ কারকাণি )- কর্তৃকারক, কর্মকারক, করণকারক, সম্প্রদানকারক, অপাদানকারক ও
অধিকরণ কারক।
১। কর্তৃকারক
"করোতি ইতি কর্তা" যে কোন কাজ করে সেই কর্তা । কর্তাকেই বলা হয় কর্তৃকারক। ক্রিয়া সম্পাদনের ব্যাপারে কর্তৃকারকের মুখ্য ভূমিকা থাকে। স্বতন্ত্রঃ কর্তা যে নিজে ক্রিয়া সম্পন্ন করে, তাকে কর্তৃকারক বলে। যেমন- শিশুঃ হসতি। মেঘঃ পদ্ধতি। ময়ূরাঃ নৃত্যন্তি ।
২। কর্মকারক
ক্রিয়া দ্বারা কর্তা যাকে বা যে বস্তুকে প্রধানভাবে পেতে চান, তাকে কর্মকারক বলে। সাধারণত ক্রিয়াপদকে 'কি' বা 'কাকে' দিয়ে প্রশ্ন করে যে উত্তর পাওয়া যায়, তাকে কর্মকারক বলা হয়। যেমন- অহং চন্দ্রং পশ্যামি -আমি চাঁদ দেখছি। যদি প্রশ্ন করা হয় 'কি দেখছি? তাহলে উত্তর হবে 'চাঁদ'। সুতরাং 'চন্দ্রং' কর্মকারক।
মাং জানাতি সে আমাকে জানে। যদি প্রশ্ন করা হয় কাকে জানে'? তাহলে উত্তর হবে আমাকে। সুতরাং,
'মা' কর্মকারক।
৩। করণকারক
হতেন গৃহাতি বালিকা। সা চক্ষুয়া পশ্যতি।
উপরে প্রদত্ত উদাহরণ দুটি লক্ষ্য কর। প্রথম উদাহরণে কর্তা 'বালিকা' গ্রহক্রিয়া সম্পন্ন করছে 'হস্তেন' (হাত দিয়ো)। দ্বিতীয় উদাহরণ ‘সঃ' এই কর্তা দর্শন ক্রিয়া সম্পাদন করছে 'চক্ষুষা' (চোখ দিয়ে)
এরূপভাবে
কর্তা যার সাহায্যে ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে করণকারক বলা হয়।
৪। সম্প্রদানকারক
রাজা দরিদ্রায় ধনং দদাতি । মাতা ভিক্ষুকায় অনুং যচ্ছতি।
উপরের দুটি উদাহরণের মধ্যে প্রথম উদাহরণে রাজা 'দরিদ্রায় (দরিদ্রকে) স্বত্ব ত্যাগ করে ধন দান করছেন এবং মাতা 'ভিক্ষুকায়' স্বত্ত্ব ত্যাগ করে দান করছেন অম্ল । এরূপভাবে- যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে কোন কিছু দান করা হয়, তাকে সম্প্রদানকারক বলে।
৫। অপাদান কারক
বৃক্ষাৎ পরাশি পতন্তি । জলাৎ উত্তিষ্ঠতি বালিকা।
উপরের প্রথম উদাহরণে 'বৃক্ষাৎ' (বৃক্ষ থেকে) পাতাগুলো পড়ছে, কিন্তু বৃক্ষ স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দ্বিতীয় উদাহরণে বালিকা 'জলাৎ' (জল থেকে) উঠছে, কিন্তু জল স্থির হয়ে আছে। এরূপভাবে-
একটি বস্তু থেকে অন্য একটি বস্তু পৃথক হওয়ার পর যে বস্তুটি স্থির থাকে, তাকে অপাদান কারক বলে।
৬। অধিকরণ কারক
জলে মৎস্যার নিবসন্তি। বসন্তে কোকিলাঃ কুজন্তি। পাণিনিঃ ব্যাকরণে নিপুণঃ।
উপরে তিনটি উদাহরণ প্রদত্ত হয়েছে। প্রথম উদাহরণে 'মৎস্যাঃ' কর্তা এবং 'নিবসন্তি' ক্রিয়া। যদি প্রশ্ন করা হয় মৎস্যাঃ কুত্র নিবসন্তি' (মাছগুলো কোথায় বাস করে), তবে উত্তর হবে 'গে' দ্বিতীয় উদাহরণ 'কোকিলাঃ' কর্তা এবং 'কুতাঞ্জি' রিনা। যদি প্রশ্ন করা হয় 'কদা কোকিলাঃ কুন্তি' (কোকিলগুলো কখন কুজন করে), তাহলে উত্তর হবে 'বসন্তে'। তৃতীয় উদাহরণে যদি প্রশ্ন করা হয় পাণিনির কমিন বিষয়ে নিপুণঃ), (পাণিনি কোন বিষয়ে নিপুণ), তাহলে উত্তর পাওয়া যাবে 'ব্যাকরণে'। এরূপভাবে-
যে স্থানে, যে কালে ও যে বিষয়ে ক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তাকে অধিকরণ কারক বলে।
(খ) বিভক্তি
বিভক্তি সাত প্রকার -প্রথমা, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠ ও সপ্তমী।
নিম্নলিখিত স্থলে প্রথমা বিভক্তি হয়ঃ
১। যা ধাতুও নয়, প্রত্যয়ও নয়, অথচ যার অর্থ আছে, তাকে প্রাতিপদিকার্থ বলা হয়। প্রাতিপদিকার্থে
প্রথমা বিভক্তি হয়। যেমন- বৃক্ষা, পুষ্পম, লতা, পরম, ইত্যাদি।
২। কর্তৃবাচ্যে কর্তৃকারকে প্রথমা বিভক্তি হয়। যেমন- বালকঃ পঠতি। শিশুঃ রোদিতি ।
৩। কর্মবাচ্যে কর্মকারকে প্রথমা বিভক্তি হয়। যেমন- বালকেন চন্দ্রো দৃশ্যতে। ছাত্রেণ পুস্তকং পঠাতে।
৪। সম্বোধনে প্রথমা বিভক্তি হয়। যেমন- শুনু রে পাচ্ছ। তো রাজন! ৫। ইতি, নাম প্রভৃতি অব্যয় যোগে প্রথমা বিভক্তি হয়। যেমন- ত্বাং পণ্ডিত ইত্তি জানামি। দশরথো নাম
রাজা আসীৎ।
দ্বিতীয়া বিভক্তি
নিম্নলিখিত সালে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় :-
১। কর্মকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- অহং রামায়ণং পঠামি। বালকঃ চন্দ্রং পশ্যতি। ২। ক্রিয়াবিশেষণে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- কোকিলা মধুরং কৃজতি। অশ্বঃ দ্রুতং ধাবতি ।
৩। অভান্ত সংযোগ অর্থাৎ ব্যাপ্তি বোঝালে কালবাচক ও পথবাচক শব্দের উত্তর দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। একে সংক্ষেপে বলা হয় ব্যাস্ত্যর্থে দ্বিতীয়া।
(ক) কালবাচক শব্দের উত্তর- সমাসং ব্যাকরণং পঠতি। ছাত্রো বর্ষং কাব্যম্ অধাতে।
(খ) পথবাচক শব্দের উত্তর- গিরিঃ ক্রোশ তিষ্ঠতি। যোজনং হিমালয়তিষ্ঠতি।
৪। উভয়তা, সর্বতঃ, ধিক, যাবৎ ও ঋতে শব্দের যোগে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- বিশ্বং সর্বতঃ ঈশ্বরঃ
বিরাজতে। ধিক্ দেশদ্রোহিণ। নদীং যাবৎ পন্থাঃ জ্ঞানং ঋতে সুখং নাস্তি। ৫। অভিতঃ, (সম্মুখে), পরিতঃ (চতুর্দিকে), সময়া (নিকটে), হা- (হায়) এবং প্রতি শব্দের যোগে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন-বিদ্যালয়ম্ অভিত উদ্যানম্। গ্রামং পরিতঃ বনম্ অস্তি। ন সময় নদী
প্রবহতি। হা পাপিনম্। দীনং প্রতি কৃপাং কুরু। ৬। অনু, প্রতি প্রভৃতি কতগুলো অব্যয় স্বতন্ত্রভাবে বিভিন্ন অর্থে প্রযুক্ত হলে তাদের কর্মপ্রবচনীয় বলা হয়। কর্মপ্রবচনীয়যোগে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- জপম অনু প্রাবর্ষ। অনু হরিং সুরাঃ।
তৃতীয়া বিতরি
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে তৃতীয়া বিভক্তির প্রয়োগ হয়ঃ-
১। অনুক্ত কর্তায় অর্থাৎ কর্মবাচ্যে ও ভাববাচ্যের কর্তায় এবং করণকারকে তৃতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন-
(ক) কর্মবাচ্যের কর্তায় ৩য়া -বালকেন চন্দ্রো দৃশ্যতে।
(খ) ভাববাচ্যের কর্তায় ওয়া শিশুনা বুদ্যতে ।
(গ) করণকারকে ৩য়া -বয়ং চক্ষুষা পশ্যামঃ।
২। হেতু অর্থে হেতুবোধক শব্দে তৃতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- বিদ্যয়া যশো লভ্যতে। দুঃখেন রোদিতি বৃদ্ধা ।
৩। সহা (সহ, সাধন, সাকম্ ও সমম) শব্দের যোগে অপ্রধান শব্দের উত্তর তৃতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন-
তেন সার্ফম অহং গমিষ্যামি। পিত্ৰা সময় পুত্রা গচ্ছতি। সহার্থ শব্দের অপ্রযোগেও তৃতীয়া বিভক্তি হয়। পিতা পুত্রেণ পদ্ধতি (পুত্রেণসহ গচ্ছতি এরূপ অর্থ)।
৪। জনার্থ (ঊন, হীন, শূন্য, রহিত), বারণার্থ (অলম্, কৃতম্ কিম) ও প্রয়োজনার্থ (প্রয়োজন, অর্থ, কার্য,
গুণ) শব্দের যোগে তৃতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- একেন উনা। বিদ্যয়া হীনা। অলং প্রদেশ। ধনেন
কি? বিবেকেন রহিতঃ।
৫। অপবর্গ অর্থাৎ ক্রিয়াসমাপ্তি ও ফলপ্রাপ্তি বোঝালে অর্থবাচক (পথবাচক) ও কালবাচক শব্দের উত্তর তৃতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- কোশেন কাবাং পরিতম্ (এক ক্রোশ পথ হেঁটে কাব্য পাঠ করে শেষ করেছে এবং কাব্যজ্ঞান লাভ করেছে)।
তেন মাসেন ব্যাকরণম্ অধীতম্ (সে একমাস ব্যাকরণ পড়ে শেষ করেছে এবং ব্যাকরণবিষয়ক জ্ঞান লাভ করেছে।
৬। যে অঙ্গের বিকারে অঙ্গীর বিকৃতি পরিলক্ষিত হয়, তাতে তৃতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- বালকঃ চক্ষুষা কাণঃ। স পালেন খঞ্জ
কেবল হানি হলেই অঙ্গবিকৃতি হয় না। আধিক্য বোঝাতেও অঙ্গবিকৃতি হয়। মুখেন ত্রিনয়ন। বপুষা
৭। যে লক্ষণ অর্থাৎ চিহ্ন দ্বারা কোন ব্যক্তি বা বস্তু সূচিত হয়, সেই লক্ষণবোধক শব্দের উত্তর তৃতীয়া বিভক্তি হয়। একে উপলক্ষণে তৃতীয়াও বলা হয়। যেমন- পুষবেন ছাত্রং জানামি। জটাভিঃ তাপসম্ অপশ্যম্।
চীব
31 সম্প্রদানকারকে চতুর্থ বিভক্তি হয়। যেমন- দরিদ্রায় ধনং দেহি। স ভিক্ষৰে ভিক্ষাং দদাতি । ২। তাদর্থ্য অর্থাৎ নিমিতার্থ বোঝাতে চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- কুচলায় হিরণাম। অশ্বায় খাসা।
৩। প্রকৃতির অন্যরূপ ভাবকে বলা হয় উৎপাত। উৎপাতের দ্বারা যার সূচনা হয় তাতে চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন-
বাতায় কপিলা বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের স্বাভাবিক রং লাল।
অতএব, বিদ্যুতের কপিল রং, প্রকৃতির অস্বাভাবিক ব্যাপার। সুতরাং এর দ্বারা সূচিত 'বাত' শব্দের উত্তর চতুর্থী বিভক্তি হয়েছে।
৪। হিত শব্দের যোগে যার হিত কামনা করা হয়, তার উত্তর চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- ব্রাহ্মণায় হিতম্। ভেষজং রোগিণে হিতম্। ৫। তুমুন প্রভায়ের অর্থে ভাববাচ্য নিষ্পন্ন শব্দ ব্যবহৃত হলে, তাতে চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- বিপ্রা
যাগায় (যটুং) যাতি। ব্রাহ্মণঃ পাকার (পরুম) যাতি। 'যটুম' এর পরিবর্তে ব্যবহৃত যাগ (জর (যজ) + ভাবে ঘ) শব্দের উত্তর এবং পম' -এর পরিবর্তে ব্যবহৃত পাক (জৱ (পছ) + ভাবে খ) শব্দের উত্তর চতুর্থী বিভক্তি হয়েছে।
৬। নমস্, স্বস্তি, স্বাহা স্বধা, অলম্ ও বষট্ শব্দের যোগে চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- দুর্গায়ৈ নমঃ। প্রজাত্যা বস্তি। অগ্নয়ে যাহা। পিতৃত্যঃ কথা। অলং (সমর্থঃ) মরো মল্লায়। ইন্দ্রায় বষট্।
দুষ্টব্য— অলম্ শব্দের সমার্থক শব্দের যোগেও চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- ভোজনায় শক্তঃ । বিবাদায়
পঞ্চমী বিভক্তি
নিম্নলিখিত সালে পঞ্চমী বিভক্তির যোগ হয় -
১ । অপাদান কারককে পঞ্চমী বিভক্তি হয়। যেমন- বৃক্ষাৎ পত্রং পততি। স গ্রামাৎ আয়াতি।
২। লাপ প্রত্যয়ান্ত ক্রিয়া উহ্য থাকলে তার কর্মে ও অধিকরণে পঞ্চমী বিভক্তি হয়। একে লাবর্থে বা খবৰ্থে পঞ্চমী বলে। যেমন- স শ্বশুরাৎ জিয়েতি (শ্বশুরং বীক্ষ্য জিয়েতি এরূপ অর্থ) স প্রাসাদাৎ নদীং পশ্যতি
(প্রাসাদ আৰুহ্য পশ্যতি এরূপ অর্থ)
৩। দুই বা বস্তুর মধ্যে একের উৎকর্ষ বোঝালে নিকৃষ্টের উত্তর পঞ্চমী বিভক্তি হয়। একে অপেক্ষার্থে পঞ্চমী বলে। যেমন- খনাৎ বিদ্যা গরীয়সী। জন্মভূমি বর্গাৎ অপি গরীয়সী।
৪। প্রভৃতি এবং বহিস শব্দযোগে পঞ্চমী বিভক্তি হয়। যেমন- শৈশবাৎ প্রভৃতি সেব্যো হরিঃ। স গ্রামাৎ বহিঃ গচ্ছতি।
৫। হেতু বোঝালে হেতুবোধক শব্দের উত্তর পঞ্চমী বিভক্তি হয়। যেমন- দুঃখাৎ রোদিতি বালা। শীতার কম্পতে বালকঃ।
ষষ্ঠী বিভক্তি
নিম্নলিখিত স্থলে ষষ্ঠী বিভক্তির ব্যবহার হয় -
১। কারক প্রভৃতির অর্থ ভিন্ন অবশিষ্ট সম্পন্ন অর্থে ষষ্ঠী বিভক্তি হয়। যেমন- মম গৃহ। বৃক্ষলা ছায়া। ২। কৃৎ প্রত্যয়ের যোগে কর্তায় ও কর্মে ষষ্ঠী বিভক্তি হয়। যেমন- কর্তায়ঃ- শিশোঃ শয়নম। সূর্যস্য উদয়ঃ । কর্মেঃ- দুখস্য পানম্ ।
৩। কর্তা ও কর্ম উভয়ের ষষ্ঠী বিভক্তি প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকলে সাধারণত কর্মে ষষ্ঠী বিভক্তি হয়। যেমন- পৰাং দোহঃ গোপেন । জলস্য শোষণং সূর্যেগ।
৪। 'মতিবুদ্ধিপূজার্থেভাশ্চ এই সূত্র অনুসারে বর্তমানকালে বিহিত 'ত্ব' প্রত্যয়ের যোগে কর্তার ষষ্ঠী বিভক্তি
হয়। যথা- সর্বেষাং বিদিত। রাজা সতাং পূজিতা। ৫। অধিকরণবাচো বিহিত 'ত্ব' প্রত্যয়ের যোগে কর্তায় ষষ্ঠী বিভক্তি হয়। যেমন- ইদম এবাং শয়িতম্ (শয্যতে অস্মিন্ ইতি শয়িত- শয্যা)। এবং এখাম্ অসিতম্ (আসাতে অস্মিন্ ইঞ্চি আসিত= আসন)।
৬। এন প্রভাষের প্রয়োগে ষষ্ঠী ও দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন- বৃক্ষবাটিকায়া বৃক্ষবাটিকাং বা দক্ষিণেন
(দক্ষিণ + এনপ) সরা
গ্রামস্য গ্রামং বা উত্তরেণ (উত্তর + এনপ) নদী বর্ততে।
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে প্রধানত সপ্তমী বিভক্তি হয় -
১। অধিকরণে সপ্তমী বিভক্তি হয় যেমন গগনে চন্দ্রঃ উদেতি। জলে মৎস্যঃ নিবসস্তি।
২। ইন প্রভায়যুক্ত প্রত্যয়ের ফর্মে সপ্তমী বিভক্তি হয়। যেমন- অধীতী ব্যাকরণে। ৩। কর্মের সাথে নিমিত্তের যোগ থাকলে নিমিত্তবোধক শব্দের উত্তর সপ্তমী বিভক্তি হয়। যেমন- চর্মণি
দ্বীনি হস্তি। ৪। যখন কোন একটি ক্লিয়ার দ্বারা অন্য একটি ক্রিয়া নির্বাহিত হয়, তখন পূর্বঘটিত নিমিত্তবোধৰ ক্রিয়াটিতে সপ্তমী বিভক্তি হয়। একে ভাবে সপ্তমী বলে। যেমন- উদিতে সূর্যে উত্থিতঃ। রবো অস্ত্রমিতে স গৃহং গতঃ
৫। অনাদর বোঝালে যে ক্রিয়া দ্বারা ক্রিয়ার লক্ষিত হয় তাতে বিকল্পে ষষ্ঠী ও সপ্তমী বিভক্তি হয়। যেমন- - রূপতঃ পুত্রস্য বুদতি পুত্রে বা মাতা জগান।
৬। নির্ধারণ বোঝালে অর্থাৎ জাতি, গুণ, ক্রিয়া ও সংজ্ঞা এদের যে কোন একটির সমুদয় থেকে একের পৃথককরণ বোঝালে জাতি প্রভৃতিতে বিকল্পে যষ্ঠী ও সপ্তমী বিভক্তি হয়। যেমন- কবীনাং কবিষু কালিদাসঃ শ্রেষ্ঠ।।
আরও দেখুন...